টাইগার (জগদীশ) টাইটলার
ডঃ অরুণ চক্রবর্তী
(কাহিনী কবিতা)
প্রশ্ন একটাই, ১৯৮৪ ইন্দিরা হত্যা ৩১ অক্টোবর থেকে ১০ই নভেম্বর দেশ জুড়ে দাঙ্গা! বিনা দোষে, বিনা ভিডিও রেকর্ডে বা সাক্ষী সাবুদে, ষড়যন্ত্র হলো তিন কংগ্রেসী নেতার বিরুদ্ধে!
জগদীশ টাইটলার ছিলেন অন্যতম!
দিল্লী সদর সংসদীয় কেন্দ্র থেকে ৫ বার নির্বাচিত, ৭ বিধানসভা কেন্দ্র, যার পুরোটাই সংখ্যাধিক্য শিখ অধ্যুষিত! নিছক, শকুণীর ছকে, চরিত্র হননের লক্ষ্যে, নিশানা করা হলো, সর্বভারতীয় পরিচিতির যুব আইকন, যুববীর শিখ দরদী, জগদীশ টাইটলারকে, হাস্যকর সাক্ষ্য, উইটনেস;
কাউনসেলের, সর্দার ফুলকার, ৩ নভেম্বর ১৯৮৪, সকাল ১০টায় দাঙ্গাবাজদের, নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, টাইটলার!! তিনমূর্তিতে, সকাল ৭টা থেকে বিকেল তিনটে, ইন্দিরার মরদেহর পাশেই দাঁড়িয়ে নিস্পন্দ, বেদনাহত! জগদীশ টাইটলার! দূরদর্শন দেখিয়েছে বারবার, তবে, কিভাবে, গুরুদোয়ারা, আক্রমণ করলেন তিনি সঙ্গে নিয়ে দলে দলে, উন্মত্ত জনতা?! অদ্ভুত যুক্তি! হাস্যকর যুক্তি! কাউন্সিল ফুলকা, নিয়ে এলেন এক মিথ্যে সাক্ষী! জসবীর সিং, যার ওপরে চলছে হত্যার মামলা, নানাবতী কমিশনের সুপারিশে ছিল কোর্টের গ্রেফতারী পরওয়ানা, জসবীর পলাতক, গ্রেফতরী এড়াতে!
সে আশ্রয় নিয়েছে আমেরিকাতে!
জ্বলছে দিল্লী, কংগ্রস পার্টি লাগিয়েছে, রিলিফ ক্যাম্প, টাইটলার নেতৃত্বে। তাঁর সাথে বহু শিখ যুবক, চলছে আগে পিছে, শিখেদের হবে ঘরে ফেরাতে। জগদীশ টাইটলার, খোঁচা খাওয়া বাঘ, ঢুকলেন, দিল্লি পুলিশের, কমিশনার মিঃ ট্যান্ডনের ঘরে, প্রশ্ন করলেন সামান্য স্বাভাবিক, উত্তেজিত, মিঃ ট্যান্ডন, কেন রিলিফের কাজে, আপনি, আমার ছেলেদের সহযোগীতা করছেন না?
পুলিশ তো কথা দিয়েছিল, শিখেদের,
ত্রাণের কাজে, সর্বোচ্চ স্তরে সাহায্যের, বাড়াবেন হাত! এই কি দিচ্ছেন সাথ্!
পুলিশের কমিশনার করছিলেন, সাংবাদিক সম্মেলন! এসব থামান, আগে শিখেদের বাড়ীতে পৌঁছোন!
টাইটলার অদম্য, যৌবনের দূত! সঞ্জয় গান্ধীর প্রিয় পার্ষদ। প্রকৃতই নির্ভীক, দেশভাগের দাঙ্গায়, লাহোরে নিহত পিতা মাতা, টুকটুকে, ফুটফুটে,
দেবশিশু যেন, কুড়িয়ে নিলেন, রেভারেন্ড টাইটলার, মানুষ হলেন সাহেবী, কেতা, কায়দায়। কিন্তু, পালক পিতা, পাশাপাশি, শিখিয়ে ছিলেন, ভারতীয় পরম্পরা, ভুলতে দেননি, হিন্দু সংস্কার! এই ছিলো, আসল সত্য, তাই, দাঁড়ান আজো, যেমন ছিলেন ১৯৮৪ সালে শিখেদের পাশে, সহমর্মিতার বশে! বার বার শিরোনামে টাইটলার, কারণ, তিনি ছিলেন কংগ্রেসের, আকাশে ওড়ার প্রপেলার। যুব কংগ্রেস অন্ধ ভক্ত ঐ যুব আইকনিক নেতার! তিনিই জানতেন কেমন করে রুখতে হয় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি কে, শুধু ধর্মীয় গোঁড়ামির পিছিয়ে থাকা অচলায়তন ব্যবস্থাকে। হাতিয়ার করতেন দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদকে।
কংগ্রেসের ভেতরে ও বাইরে, তাঁর শত্রু ছিলো অনেক, কিন্তু, বড় একটা গায়ে মাখতেন না! তাঁর ভরসা, তুমুল জনপ্রিয়তা! যুব নেতা থেকে হয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী! কংগ্রেসের পাওয়ার পলিটিক্সের বিশাল জায়গায় ছিলেন। তাই বাঁকা হাসি হাসলেন কেউ কেউ! হঠাৎ ইন্দিরা হত্যা, কুচক্রীরা সফল হলো, জগদীশ টাইটলার, সজ্জন কুমারের রাজনৈতিক জীবন ও জনপ্রিয়তা কে শেষ করতে। বলাই বাহুল্য, এরা সে কাজে, কিছুটা সফল! কিন্তু, সত্য উন্মোচিত হবেই! আজ বহুচর্চিত শিখ বিরোধী দাঙ্গা অন্য মোড় নিচ্ছে আর বিরোধীদের পেশ করা সাক্ষ্য ও প্রমাণ ফ্রড বলে প্রমাণিত!
নানাবতি সাক্ষ্য মামলায়, কোন জায়গায় টাইটলার কে, দাঙ্গাকারী বা অন্য কোন যোগসাজশে জড়িত থাকা, প্রমাণ করা যায়নি। অনেক অনেক প্রকৃত দাঙ্গাকারী লোকেরা দায় স্বীকার করেছে কিন্তু একজনও হলফনামা দেননি, জগদীশ টাটইটলার কে জড়িয়ে। একমাত্র সর্দার ফুলকা ও তাঁর পেটোয়া জসবির সিং ছাড়া!
২৭ বছর ধরে দিল্লীর যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে! সিবিআই এখনো পারেনি স্থির সিদ্ধান্তে আসতে, ফাইনাল চার্জশিট কোথায়!? জগদীশ টাইটলারের মতোন গুরুত্বপূর্ণ নেতার নাম জড়ায়!
টাইগার টাইটলারের কংগ্রেসের জাতীয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো, এক অপুরনীয় ক্ষতি, এটা জানে খুব ভালো, কংগ্রেস দল ও বিজেপি, জানে দিল্লী প্রদেশ কংগ্রেস ! দেশবাসী জানেন বিলক্ষণ,
যদি টাইটলার ও সজ্জন কুমার, দুজনেই থাকতেন নেতৃত্বে, তুলে দিত মুখে রক্ত পাকিস্তানী আপ পার্টির, থাকত না দিল্লীতে ওদের সরকার।
যত দাঙ্গা আজ পর্যন্ত দিল্লি দেখেছে,
কোন সংবাদপত্র কি একবারও, টাইটলার বা সজ্জন কুমারের নাম ছেপেছে! উত্তর, “না”
আজ পাঞ্জাবে কংগ্রেস, সংকটে, হরিয়ানায়, হিমাচলে, ইউপি বা বিহারে, কৈ, ইন্দিরার সময়ে তো ছিলো না; এত নৈরাজ্য, দেশজোড়া নৈরাশ্য! প্রভাবশালী, শক্তিশালী, সাহসী যৌবনদূত, সঞ্জয় গান্ধীর, ক্রেমলিনের ষড়যন্ত্র এবং ওয়াশিংটনের পরাজয়! থেমে গেলো, সঞ্জয়! থেমে গেলো, ভারতের ইউথ ব্রিগেড, টাইগার টাইটলার, সজ্জন কুমার, মণীন্দর বিট্টা, কমল নাথ….চন্দন বাগচী, সোমেন মিত্ররা!
সত্যিই তো অপূরণীয় ক্ষতি, ভুগছেন সমগ্র জাতি, ভারত ভারতী! মিথ্যে মামলা, নানান্ তুচ্ছ ঝামেলা, ঘিরে ধরে ছিলো সঞ্জয় গান্ধীর ছেলেদের, তাঁর মৃত্যু ঘটিয়েছে কমিউনিস্ট আর জেহাদীরা, কারণ, উভয়েই পড়েছিল, নিদারুণ প্রাণ সংকটে!বেঁচে থাকলে সঞ্জয়, কোনদিনও, মাথায় উঠতো না বিজেপি, কোনদিনও বাড় বাড়ন্ত হতো না, আঞ্চলিক দলগুলোর, কোনওদিনও না। উনি চাইতেন, শক্ত, সবল কেন্দ্রীয় সরকার! সমস্ত রাজ্যে কংগ্রেস সরকার। তুর্কমান গেট ভেঙে, দিল্লী সাফ্ করার সময়ে, জেহাদ্ করলে, হাড়গোড় ভেঙে পকেটে ঢুকিয়ে দেবেন। আর কমিউনিস্টদের মাংস দিয়ে হবে ওনার গ্রেটডেন, ডোবারম্যান, আর বুলটেরিয়ারদের লাগাতার ফিস্ট!
তাই সঞ্জয় ডক্টরিন, আজ নিয়েছেন রাশিয়ার পুটিন, স্বাভাবিক শাসন চালাচ্ছেন। কিন্তু, মূর্খ বাঁদরের দেশ, সঞ্জয় হত্যা মেনে নিয়ে, এক অন্ধ কূপে করলো নিজেদের নিক্ষেপ!
আমাকে আমেরিকা ও জার্মানিতে; শুনতে হয়েছে ভারত নিয়ে অনেক কুকথা! কিন্তু, জেনেও ফোঁস করে উঠেছি, বেঁধেছি বিদেশীদের নিজের যুক্তিজালে!
কিন্তু প্রকৃত সত্য তো সত্যই! এ দেশের আছে টা কি? সলিড্ সেনা বাহিনী, বিমান ও নৌবাহিনী ছাড়া! কিছু আধাসামরিক সামর্থ্য ছাড়া! কিছু ডিআরডিও, ইসরোর আর ভাবা এ্যাটমিক রিসার্চ আর ইন্ডিয়ান নিউক্লিয়ার কমিশন ছাড়া কিচ্ছু নেই!
১২৫ কোটির দেশ, ২০ কোটি বেআইনি, বাসিন্দা, সমস্ত দেশে ছড়িয়ে গেছে! আরো ৪০ কোটি! পাকিস্তান জিতলে, ফাটায় বাজী, ওড়ায় পাকিস্তানী পতাকা! পড়ে রইল ৪৫ কোটি, নিজেদের ভেতর ঝগড়া করে! আরও ২০ কোটি দেশের অভাবি; অসংঘটিত গরীব শ্রেণীর; দরীদ্র শ্রেণীর, নীচে থাকা মানুষজন! তাই, চাই একমাত্র, সঞ্জয় ব্রিগেড, কোন কথা নয়, ভূষি মাল, করো সাফ্! দেশের বিরুদ্ধে যে পড়ুক ধরা; নেই কোনও তদ্বির বা মাফ।
চাই অনেক শক্ত মন্ত্রীসভা, আরো শক্ত মন্ত্রী, হতে হবে চন্ডাশোক। তাই চাণক্য বিধান বারবার, শিবাজী বীর ও সাহসী বিক্রমী পৃথ্বীরাজ, মহারাজা রণজিৎ সিং। সবকিছুর ভেতর থাকবে মহা শক্তিশালী ট্যুইস্টার, হুইলারের আমাদের প্রতাপী টাইটলার। দেশবিভাগের ঘোর বিরোধী! বিচক্ষণ, রাজনীতিক নির্ভীক!
(REGISTERED UNDER COPYRIGHT ACT)