দোলে দোদ্যুল দোলে
~ দেবারতি গুহ সামন্ত
লাল আবিরটা কেমন ফ্যাকাশে,
সময়ের সাথে হারিয়েছে ঔজ্জ্বল্য।
স্মৃতিকণাগুলো কিন্তু ভীষণ টাটকা,
ঘুনপোকা খেতে পারেনি কুড়ে কুড়ে।
ওই লাল আবিরেই তো মিশে আছে,
এক চিমটে সিঁদুর আর লাল তরল রক্ত।
মিলে মিশে এক হয়ে গেছে ওদের রঙ,
যা একসময় রাঙিয়ে ছিল কারো সিঁথি।
হাজার অভাব,অভিযোগ,অনটনেও,
মলিন হয়নি লাল আবিরের সোহাগ।
তারপর আচমকাই এক দোল পূর্ণিমায়,
আকাশ ভেঙ্গে নেমে এলো বসন্তের অভিশাপ।
বৃন্দাবনে রাধা তখন হোরি খেলায় ব্যস্ত,
গোপিনী বেষ্টিত শ্রীকৃষ্ণের সাথে।
আর এদিকে এক আটপৌড়ে গৃহবধূ,
রাত জাগা চোখে সেবা করে চলেছে যক্ষা রুগীকে।
সে যে তার স্বামী,তার সিঁথির সিঁদুর,
ক্ষয় রোগ ধীরে ধীরে গ্রাস করছে তার লাল রঙ।
আগুনরঙা পলাশ হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাকে,রঙ খেলতে,
মুখে রক্ত উঠে তার স্বামী তখন পাড়ি দিয়েছে স্বর্গলোক।
হাহাকার শূণ্যতায় পাগলপারা গৃহবধূর সিঁথি বেবাক ফাঁকা,
লাল রঙ গুটি গুটি পায়ে গিয়ে মিশছে রক্তের সাগরে।