মহালয়া / উপাসনা ব্যানার্জী | Mahalaya / Upasana Banerjee [Short article]

মহালয়া

~✍️উপাসনা ব্যানার্জী
Artist:- Ditiya Tapli
    মহালয়া হল দেবী মহামায়া আলয়ে আসেন যে পুন্য তিথিতে, সেই বিশেষ তিথি। সূচনা হয় দেবীপক্ষের। বাজলো ঢাক, বাজলো তোমার আগমনী/ শারদপ্রভাতে শুনি তোমার জয়ধ্বনি।' আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের পূণ্যলগ্ন, শুভ মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু। মা আজ পা রেখেছেন মর্ত্যলোকে। চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া। বাঙ্গালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এ হচ্ছে দুর্গা দেবীর আগমনী বার্তা।পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছেন। চারদিকে অশুভের প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হলেন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা।মহালয়ার সময় ঘোর অমাবস্যা থাকে। মহাতেজের আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়। প্রতিষ্ঠা পায় শুভশক্তি।বাংলায় মহালয়ার দিন দুর্গাপূজার সূচনা হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিন দেবী দুর্গা মর্ত্যলোকে আবির্ভূতা হন।মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়। গঙ্গাতীরে ভক্তরা পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনায় তর্পণ করেন। এদিন চক্ষুদান মায়ের চক্ষুদান করা হয়।
     বছর ঘুরে আবারো উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি। হিমালয়ের কৈলাশে স্বামী শিবের বাস। সেখান থেকেই সুদূর পথ পাড়ি দিয়ে আসেন সমতল ভূমির এই বাংলায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন গণেশ, কার্ত্তিক, লক্ষী আর সরস্বতীকে। প্রতিবছর শরৎকালে দেবী দুর্গার এই আগমন হয় তার নিজ ভূমিতে। হিন্দু শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত।
    মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদিন গঙ্গাতীরে প্রার্থনা করে ভক্তরা মৃত আত্মীয়স্বজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন। রাজা সুরথ সর্বপ্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তকালে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। শ্রী রামচন্দ্র রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়। এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন।এভাবেই মর্ত্যলোকে আবাহন ঘটে দেবী দুর্গার। মন্দিরে মন্দিরে উচ্চারিত হয় 'যা দেবীষু সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্ত্যসৈ নমস্ত্যসৈ নমস্ত্যসৈ নমঃ নমঃ'। ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই পূজারীরা দুর্গা মায়ের আগমন ধ্বনি শুনতে পান।
দেবী নিত্যা, তথাপি দেবগণের কার্যসিদ্ধিহেতু সর্বদেবশরীরজ তেজঃপুঞ্জ থেকে তখন প্রকাশিত হয়েছেন বলে তাঁর এই অভিনব প্রকাশ বা আবির্ভাবই মহিষমর্দিনীর উৎপত্তিরূপে খ্যাত হল।
দেবী সজ্জিতা হলেন অপূর্ব রণচণ্ডী মূর্তিতে।
হিমাচল দিলেন সিংহবাহন,
বিষ্ণু দিলেন চক্র,
পিনাকপাণি শঙ্কর দিলেন শূল,
যম দিলেন তাঁর দণ্ড,
কালদেব সুতীক্ষ্ণ খড়্গ,
চন্দ্র অষ্টচন্দ্র শোভা চর্ম দিলেন,
ধনুর্বাণ দিলেন সূর্য,
বিশ্বকর্মা অভেদবর্ম,
ব্রহ্মা দিলেন অক্ষমালা-কমণ্ডলু,
কুবের রত্নহার।
সকল দেবতা মহাদেবীকে নানা অলঙ্কারে অলঙ্কৃত ও বিবিধপ্রহরণে সুসজ্জিত করে অসুরবিজয় যাত্রায় যেতে প্রার্থনা করলেন।
রণদুন্দুভিধ্বনিতে বিশ্বসংসার নিনাদিত হতে লাগল।
যাত্রার পূর্বে সুর-নরলোকবাসী সকলেই দশপ্রহরণধারিণী দশভুজা মহাশক্তিকে ধ্যানমন্ত্রে করলেন অভিবন্দনা।
জটাজূটসমাযুক্তামর্ধেন্দুকৃতশেখরাম্‌ ।
লোচনত্রয়সংযুক্তাং পূর্ণেন্দুসদৃশাননাম্‌ ।।
[দেবী জটাজূটধারিণী, তাঁর শিখর অর্ধচন্দ্র দ্বারা ভূষিত, তাঁর পূর্ণচন্দ্রের ন্যায় কান্তিময় মুখমণ্ডল ত্রিনয়ন শোভিত।]
==================================


🌺🌺 সবাই জানাবেন গল্প কেমন লাগলো?🙂🙂 🌻🌻 গল্প ভালো লাগলে লাইক করুন আর নিজের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন 🙏🌹 💐🙏ধন্যবাদ 🙏🌼।
*(কিছুটা নিজের লেখা ,কিছুটা সংগৃহীত)

1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন